ব্যঞ্জনবর্ণ কাকে বলে উদাহরণ | ব্যঞ্জনবর্ণ কয়টি ও কী কী?

এই পোস্টে আমরা ব্যঞ্জনবর্ণ কাকে বলে উদাহরণ, বাংলা ব্যঞ্জনবর্ণ কয়টি ও কী কী, ব্যঞ্জনবর্ণ কয় প্রকার ব্যঞ্জনবর্ণের সংক্ষিপ্ত রূপ কয়টি আলোচনা করা হলো
ব্যঞ্জনবর্ণ কাকে বলে উদাহরণ দাও

এই পোস্টে আমরা ব্যঞ্জনবর্ণ কাকে বলে, বাংলা ব্যঞ্জনবর্ণ কয়টি ও কী কী, ব্যঞ্জনবর্ণ কয় প্রকার ও কি কি ব্যঞ্জনবর্ণের সংক্ষিপ্ত রূপ কয়টি ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করব। ব্যঞ্জনবর্ণ বাংলা ভাষার একটি গুরুত্বপুর্ণ অংশ ব্যঞ্জনবর্ণ কাকে বলে তা জানা আমাদের ভীষণ প্রয়োজন এবং ব্যঞ্জনবর্ণ কাকে বলে এই প্রশ্নটি বিভিন্ন শ্রেণীর পরীক্ষায় আসে তাই আসুন ব্যঞ্জনবর্ণ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

ব্যঞ্জনবর্ণ কাকে বলে উদাহরণ দাও

যে সব বর্ণ স্বরবর্ণের সাহায্য ছাড়া নিজে নিজে স্বাধীনভাবে উচ্চারিত হতে পারে না তাদের ব্যঞ্জনবর্ণ বলে। যেমন: ক্=ক+অ, খ্=খ+অ, গ্=গ+অ, ঘ্=ঘ+অ, চ্=চ+অ
ব্যঞ্জনবর্ণ উচ্চারণ করার সময় তা মুখগহ্বরের কোন না কোন স্থানে বাধা সৃষ্টি করে এর ফলে ব্যঞ্জনবর্ণ উচ্চারণের সময় অন্য কোনো বর্ণের সাহায্য নিতে হয়।

ব্যঞ্জনবর্ণ কয়টি ও কী কী

ব্যঞ্জনবর্ণ কয়টি ও কী কী

বাংলা বর্ণমালায় ব্যঞ্জনবর্ণের সংখ্যা ৩৯ টি।
বাংলা বর্ণমালায় ব্যঞ্জনবর্ণ গুলি হলো: 
ক, খ, গ, ঘ, ঙ, চ, ছ, জ, ঝ, ঞ, ট, ঠ, ড,‌ ঢ, ণ, ত, থ, দ, ধ, ন, প, ফ, ব, ভ, ম, য, র, ল, শ, ষ, স, হ, ড়, ঢ়, য়, ৎ, ং, ঃ

ব্যঞ্জনবর্ণের সংক্ষিপ্ত রূপ কয়টি

ব্যঞ্জনবর্ণের সংক্ষিপ্ত রূপকে বা সাংকেতিক রূপকে ফলা বলে। বাংলা বর্ণমালায় ৬টি ফলা আছে। যথা:
ম- ফলা: আত্মীয়, পদ্ম, বিস্ময়, রশ্মি, ভস্ম
ব- ফলা: বিশ্বাস, বিশ্ব, উদ্বেগ,উদ্বেলিত, উদ্বাস্তুু
ন- ফলা: চিহ্ন, রত্ন, পূর্বাহ্ন, অপরাহ্ণ
র- ফলা: রাত্রি, ছাত্র, মাত্র, গ্রহ
য- ফলা: ব্যথা, ব্যবহার, স্বাস্থ্য, সন্ধ্যা
ল- ফলা: ক্লেশ, প্লাবন, প্লীহা, বিপ্লব

ব্যঞ্জনবর্ণ কয় প্রকার ও কি কি

ব্যঞ্জনবর্ণকে কয়েক ভাগে ভাগ করা হয় সেগুলি সমন্ধে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
স্পর্শবর্ণ: 'ক' থেকে 'ম' পর্যন্ত এই ২৫টি বর্ণ উচ্চারণ করার সময় জিহ্বার কোনো না কোনো অংশ কণ্ঠ, তালু, মূর্ধা বা দণ্ড অথবা অধরের সঙ্গে স্পর্শ হয় বলে এই ২৫ টি বর্ণকে স্পর্শবর্ণ বলে। ক থেকে ম পর্যন্ত যে ২৫ টি বর্ণ আছে, সেই সকল বর্ণগুলি উচ্চারণ করার সময় জিব্বার সঙ্গে মুখের কোনো না কোনো অংশের স্পর্শ হয়। তাই ক থেকে ম পর্যন্ত বর্ণ গুলিকে স্পর্শবর্ণ বলে।
স্পর্শবর্ণগুলো আবার পাঁচ ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথা- ক-বর্গ, চ-বর্গ, ট-বর্গ, ত-বর্গ, প-বর্গ
ক-বর্গ: ক, খ, গ, ঘ, ঙ
চ-বর্গ: চ, ছ, জ, ঝ, ঞ
ট-বর্গ: ট, ঠ, ড, ঢ, ণ
ত-বর্গ: ত, থ, দ, ধ, ন
প-বর্গ: প, ফ, ব, ভ, ম

উস্মবর্ণ: যে সমস্ত বর্ণ উচ্চারণের সময় উস্মা অর্থাৎ শ্বাসবায়ুর প্রাধান্য থাকে তাদের উস্মবর্ণ বলে। যেমন: শ, ষ,‌ স, হ এই চারটি হলো উস্মবর্ণ

শিস বর্ণ: সমস্ত বর্ণ উচ্চারণের সময় প্রলম্বিত একটি শিসধ্বনির সৃষ্টি হয় তাদের শিস বর্ণ বলে। যেমন: শ, ষ, স

অন্তঃস্থবর্ণ: যে সমস্ত বর্ণ স্পর্শবর্ণ ও উস্মবর্ণ এই দুই শ্রেণীর অন্তঃ অর্থাৎ মধ্যে অবস্থান করে তাকে অন্তঃস্থবর্ণ বলে। য, র, ল, ব এই চারটি বর্ণ স্পর্শবর্ণ ও উস্মবর্ণ দুই পক্ষের মধ্যে অবস্থান করে তাই, এই বর্ণগুলিকে অন্তঃস্থ বর্ণ বলে।

নাসিক্যবর্ণ: প্রত্যেক বর্ণের পঞ্চম বর্ণ উচ্চারণের সময় শ্বাসবায়ু কেবল মুখ দিয়ে না বেরিয়ে নাক দিয়েও বার হয় তাই এদের নাসিক্যবর্ণ বলে। যেমন: ঙ, ঞ, ণ, ন, ম

অযোগবাহ বর্ণ বা আশ্রয়স্থানভাগী বর্ণ: "ঃ" ও "ং" এই দুই বর্ণ অন্য কোনো বর্ণের সঙ্গে যুক্ত না হয়ে অর্থাৎ অন্য কোনো বর্ণের আশ্রয় ছাড়া উচ্চারণ হতে পারে না তাই এদের আশ্রয়স্থানভাগী বর্ণবর্ণ বলে আবার স্বর ও ব্যঞ্জনের সঙ্গে এদের যোগ নেই অথচ উচ্চারণের সময় এরা নানা রকমের পরিবর্তন ঘটায় তাই এদের অযোগবাহ বর্ণ বলে।

তাড়নজাত বর্ণ: "ড়" ও "ঢ়" এই দুটি বর্ণ উচ্চারণের সময় জিহ্বার অগ্রভাগ উল্টে গিয়ে তার তলদেশ ঊর্ধ্বে মূর্ধায় তাড়ন সৃষ্টি করে বলে এদের তাড়নজাত বর্ণ বলে।

পার্শ্বিক বর্ণ: যে বর্ণ উচ্চারণের সময় শ্বাসবায়ু জিহ্বার দুইপাশ দিয়ে বার হয় তাকে পার্শ্বিক বর্ণ 'ল' কে পার্শ্বিক বর্ণ বলা হয়।

কম্পনজাত বর্ণ: যে বর্ণ উচ্চারণের সময় জিহ্বার অগ্রভাগ কেঁপে উঠে তাকে কম্পনজাত বলে। 'র'কে কম্পনজাত বর্ণ বলা হয়।

অঘোষ বর্ণ: প্রত্যেক বর্গের প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ণের উচ্চারনের সময় কন্ঠস্থ স্বরতন্ত্রীর কম্পন হয় না বলে কণ্ঠস্বর মৃদু থাকে এইজন্য এই বর্ণগুলোকে অঘোষ বর্ণ বলে। যেমন:- ক, খ, চ, ছ, ট, ঠ, ত, থ, প, ফ

ঘোষ বর্ণ: প্রত্যেক বর্গের তৃতীয় ও চতুর্থ বর্ণের উচ্চারণের সময় বাতাসে ধাক্কায় কণ্ঠস্থ স্বরতন্ত্রীর কম্পন হয় বলে কন্ঠস্বর গম্ভীর হয় এইজন্য এই বর্ণগুলোকে ঘোষ বর্ণ বা নাদ বর্ণ বলে। যেমন:- গ, ঘ, জ, ঝ, ড, ঢ, দ, ধ, ব, ভ

অল্পপ্রাণ বর্ণ: প্রতি বর্গের প্রথম ও তৃতীয় বর্ণ উচ্চারণে নিশ্বাস জোরে বের হয় না বলে এদের
অল্পপ্রাণ বর্ণ বলে। যেমন:- ক,গ,চ,জ,ট,ড,ত,দ,প,ব

মহাপ্রাণ বর্ণ: প্রতি বর্গের দ্বিতীয় ও চতুর্থ বর্ণ উচ্চারণে নিশ্বাস জোরে বের হয় বলে এদের মহাপ্রাণ বর্ণ বলে। যেমন:- খ,ঘ,ছ,ঝ,ঠ,ঢ,থ,ধ,ফ,ভ

আশাকরি উপরের তথ্যের মাধ্যমে ব্যঞ্জনবর্ণ কাকে বলে, ব্যঞ্জনবর্ণ কয়টি ও কী কী, ব্যঞ্জনবর্ণ কয় প্রকার, ব্যঞ্জনবর্ণ উচ্চারণের নিয়ম সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। যদি এখনও এই পোস্ট সম্পর্কে আপনার মনে কোন প্রশ্ন থেকে থাকে, তাহলে কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন। আমরা অবশ্যই আপনাকে কমেন্ট এর মাধ্যমে সাহায্য করার চেষ্টা করব। ধন্যবাদ ভালো থাকবেন।

১টি মন্তব্য

You cannot reply to comments if the comment location is not embedded

  1. ৬ মে, ২০২৪ এ ৬:৩৩ AM
    'ক্ষ' এই অক্ষৰটি আপনি লিখেন নাই