গাছ আমাদের বন্ধু রচনা : ক্লাস 5, 6, 7, 8

প্রিয় শিক্ষার্থী আজকের এই পোষ্টে গাছ আমাদের বন্ধু রচনা আলোচনা করা হলো। গাছ আমাদের বন্ধু প্রবন্ধ রচনা ক্লাস 5, 6, 7, 8, 9 এর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
গাছ আমাদের বন্ধু রচনা

গাছ আমাদের বন্ধু রচনা ক্লাস 5

গাছ নানাভাবে মানুষের উপকার করে। মানুষের বেঁচে থাকার জন্য একান্ত প্রয়োজনীয় অক্সিজেন সে পায় গাছ থেকে। এই গাছই মানুষকে প্রখর রোদে ছায়া দেয়, ফুল-ফলের সমারোহ সাজিয়ে তোলে। শুকনো পাতা ও ভেঙে যাওয়া গাছের ডালকে মানুষ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করে। বহু জীবনদায়ী ওষুধের উৎসও এই গাছ। শুধু তাই নয়, আসবাবপত্র তৈরি ও গৃহনির্মাণ থেকে শুরু করে বিভিন্ন শিল্পসামগ্রী তৈরিতেও আমরা গাছের উপর নির্ভরশীল।

সমাজে এখনও বহু গাছকে দেবতা জ্ঞানে পুজো করা হয়ে থাকে। কিন্তু নির্বিচারে গাছ কেটে মানুষ ক্রমশ হারিয়ে ফেলছে তার এই যথার্থ বন্ধুকে। মানুষ তার বিষময় ফলও ভোগ করে চলছে প্রতিনিয়ত। প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হতে বসেছে। বাড়ছে ভূমিক্ষয়, তাপমাত্রা, নষ্ট হচ্ছে জীববৈচিত্র্য। আর দেরি নয়। আমাদের সকলকে শপথ নিতে হবে আমাদের প্রিয় বন্ধু গাছকে রক্ষা করার।

গাছ আমাদের বন্ধু রচনা ক্লাস 6

ভূমিকা: 
আমরা সবাই জানি যে আমরা একটি নির্দিষ্ট পরিবেশে বাস করি। এই পরিবেশ গঠিত হয় জীব ও জড় পদার্থ দিয়ে। জীবকুলকে আবার দুটি ভাগে ভাগ করা যায়: প্রাণী এবং উদ্ভিদ। মানুষ শ্রেষ্ঠ প্রাণী হলেও বেঁচে থাকার জন্য আমাদের অন্যান্য জীবের উপর নির্ভর করতে হয়। আর এই অন্যান্য জীবের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো গাছ।

আমাদের জীবনে গাছের উপকারিতা:
পৃথিবীর সকল প্রাণীর বেঁচে থাকার জন্য গাছ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গাছই একমাত্র জীব যারা সূর্যের আলো, পানি এবং কার্বন ডাইঅক্সাইড ব্যবহার করে নিজের খাদ্য তৈরি করে। এই প্রক্রিয়ায় তারা আমাদের জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেন নির্গত করে। অর্থাৎ, আমরা যে প্রতি মুহূর্তে শ্বাস নিই, সেই অক্সিজেনের উৎস হলো গাছ।

গাছ আমাদের পরিবেশকে শুদ্ধ রাখতেও সাহায্য করে। তারা বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বন ডাইঅক্সাইড শোষণ করে এবং পরিবেশে অক্সিজেন ছাড়ার মাধ্যমে বায়ু দূষণ কমায়। এছাড়াও, গাছ মাটির ক্ষয় রোধ করে, জলবায়ু নিয়ন্ত্রণ করে এবং শব্দ দূষণ কমাতে সাহায্য করে।

মানুষের জন্য গাছের উপকারিতা অসংখ্য। আমরা গাছ থেকে ফল, শাকসবজি, ওষুধ, কাঠ ইত্যাদি পাই। গাছের ছায়ায় আমরা বিশ্রাম নিই এবং প্রকৃতির সান্নিধ্য পাই। গাছ আমাদের বাড়ি, আসবাবপত্র, কাগজ তৈরি করতে ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও, গাছ আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী। গাছের মাঝে সময় কাটালে মানুষের মন প্রশান্ত হয় এবং চাপ কমে। সুতরাং, বলা যায় যে গাছ আমাদের জীবন ও পরিবেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ। আমাদের সকলকেই গাছ রোপণ করে এবং পরিবেশ রক্ষায় কাজ করতে হবে।

উপসংহার:
গাছ আমাদের পরিবেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং এর গুরুত্ব অপরিসীম। গাছ কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে অক্সিজেন নিঃসরণ করে, বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে, মাটির ক্ষয় রোধ করে এবং জীববৈচিত্র্য বজায় রাখে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, মানুষের অবাধ গাছ কাটার ফলে এই ভারসাম্য বিঘ্নিত হচ্ছে। বন উজ্জ্বল হওয়ার ফলে জলবায়ু পরিবর্তন, বন্যা, খরা, মাটির ক্ষয় ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রকোপ বাড়ছে। পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে মরুভূমিকরণের হার বেড়ে চলেছে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য সকলের সচেতন হওয়া জরুরি। গাছ কাটা বন্ধ করে বন সংরক্ষণ এবং নতুন চারা রোপণের মাধ্যমে বনভূমি বাড়ানো প্রয়োজন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকার এবং সামাজিক সংগঠন সকলকে মিলে এই কাজে এগিয়ে আসতে পারে। মনে রাখতে হবে, একটি গাছ কেটে ফেলার অর্থ হল একটি প্রাণের অপচয়। তাই প্রতিটি গাছ কাটার পর তার পরিবর্তে অনেকগুলি চারা রোপণ করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।

গাছ আমাদের বন্ধু রচনা ক্লাস 7, ক্লাস 8, ক্লাস 9

ভূমিকা:
গাছ পৃথিবীতে সবচেয়ে প্রাচীন জীবনধারীদের মধ্যে অন্যতম। মানুষের আগেই গাছের উদ্ভব হয়েছিল। আদিম যুগে মানুষ গাছকে আশ্রয়, খাদ্য এবং প্রাকৃতিক বিপদ থেকে রক্ষার জন্য ব্যবহার করত। গাছ তাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করত। ফলশ্রুতিতে, মানুষের সঙ্গে গাছের এক অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল যা শতাব্দী ধরে অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু যুগ যুগ ধরে মানুষ নিজের স্বার্থে গাছ কেটে চলেছে। অবাধ বৃক্ষ কাটার ফলে পরিবেশের মারাত্বক ক্ষতি হচ্ছে। বন ধ্বংসের ফলে জীববৈচিত্র্য হারিয়ে যাচ্ছে, জলবায়ু পরিবর্তন ঘটছে, বন্যা, খরা ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রকোপ বাড়ছে। মানুষের এই অবাধ কার্যকলাপের ফলে পৃথিবী ধীরে ধীরে অবাসযোগ্য হয়ে উঠছে।

প্রয়োজানতা:
গাছ আমাদের জীবনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ। গাছ আমাদের নিত্যদিনের প্রয়োজনীয় অনেক কিছুই জোগায়। জ্বালানি, কাগজ, বাড়ি তৈরির কাঠ, খাদ্য, ওষুধ, ফুল, এমনকি রঙের মতো বিভিন্ন পদার্থের উৎস গাছ। এছাড়া, গাছ থেকে আমরা তেল, রজন, এবং বিভিন্ন ধরনের ওষুধি গুণাগুণ সম্পন্ন পদার্থও পাই।

উপকারিতা:
গাছ মাটির ক্ষয়রোধ করে এবং জমির উর্বরতা বাড়িয়ে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। আমরা যে শ্বাস নেই, সেই অক্সিজেন গাছই তৈরি করে। অর্থাৎ, আমাদের জীবন ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের প্রধান উৎস হল গাছ। গাছের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল, গাছ বায়ুমণ্ডলের ক্ষতিকর কার্বন ডাইঅক্সাইড (CO2) শোষণ করে। এই প্রক্রিয়ায় গাছ পরিবেশ দূষণ কমাতে সাহায্য করে এবং আমাদেরকে একটি স্বাস্থ্যকর বায়ুমণ্ডল উপহার দেয়।

বৃহ্মছেদনের কারন:
বর্তমানে আমরা বিশ্বব্যাপী বন ধ্বংসের একটি গুরুতর সমস্যার সম্মুখীন। এই ধ্বংসের মূল কারণ হল মানুষের অসীম লোভ। আমরা বনজ সম্পদ অতিরিক্ত পরিমাণে ব্যবহার করছি এবং বন কেটে নতুন বসতি স্থাপন করছি। এছাড়াও, বন্যপ্রাণী শিকার এবং বনজ সম্পদ অবৈধভাবে ব্যবসায়ের কারণে বন ধ্বংস আরও ত্বরান্বিত হচ্ছে। বন ধ্বংসের ফলে পরিবেশের উপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। বন ধ্বংসের কারণে বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইডের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা গ্রিনহাউস প্রভাবকে বাড়িয়ে তুলছে এবং ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়াও, বন ধ্বংসের ফলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমে যাচ্ছে, নদী-নালা শুকিয়ে যাচ্ছে এবং ভূমিক্ষয়ের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

বৃক্ষরোদন নয় বৃক্ষরোপন:
প্রতি বছর সরকারি ও বেসরকারি স্কুল, কলেজ এবং বিভিন্ন সমাজসেবামূলক সংস্থা বনমহোৎসব পালন করে। এই অনুষ্ঠানে বিপুল সংখ্যক গাছ রোপণ করা হয়। তবে গাছ রোপণের পাশাপাশি এর যত্ন নেওয়াও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রোপিত গাছ যাতে বেঁচে থাকে এবং বড় হতে পারে সেদিকে নজর দেওয়া জরুরি।

এজন্য সচেতনতা সৃষ্টির জন্য স্লোগান দেওয়া যেতে পারে, যেমন "গাছ লাগাও, প্রাণ বাঁচাও"। এই ধরনের স্লোগান মানুষকে গাছের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন করে তুলতে সাহায্য করবে।

সরকারকেও বন সংরক্ষণের জন্য কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। "বৃক্ষছেদন নয়, বৃক্ষ রোপণ" এই স্লোগানটি সরকারের জন্য একটি উপযুক্ত স্লোগান হতে পারে। সরকারকে বন ধ্বংস রোধে কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে এবং বন সংরক্ষণে জনগণকে উৎসাহিত করতে হবে।

গাছ আমাদের বন্ধু রচনা ক্লাস 10

ভূমিকা:
বৃক্ষকে পৃথিবীর প্রথম প্রাণী বলা যেতে পারে। ভূমির অন্তর থেকে বের হয়ে আসার পর সূর্যকে প্রথম প্রণাম করেছিল বৃক্ষ। ধীরে ধীরে পৃথিবীকে সবুজ করে তোলার কাজটিও শুরু করেছিল বৃক্ষ। কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বৃক্ষকে ‘মৃত্তিকার বীর সন্তান’ বলে অভিহিত করেছেন। পৃথিবীর সৃষ্টির শুরু থেকেই বনসজ্জা সব সময় উৎসবমুখর ছিল। কিন্তু সেই সময় মানুষের কোনো উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল না।

আশ্রয়:
মানুষের আবির্ভাবের পর থেকেই বৃক্ষ মানুষের জীবনে এক অপরিহার্য উপাদান হয়ে আছে। আদি মানুষের খাদ্য, বস্ত্র ও আশ্রয়ের প্রধান উৎস ছিল বৃক্ষ। সভ্যতার বিকাশের সাথে সাথে মানুষের চাহিদা বৃদ্ধি পেলেও বৃক্ষের গুরুত্ব কখনো কমেনি। আজও মানুষের জীবন বৃক্ষের উপর নির্ভরশীল।

প্রাচীন সভ্যতার উন্মেষ:
ভারতীয় সভ্যতার উৎপত্তিস্থল হিসেবে তপোবনগুলিকে বিবেচনা করা হয়। প্রাচীনকালে ভারতীয় ঋষিমণ্ডলী তপোবনে বসবাস করতেন এবং প্রকৃতির সাথে একাত্ম হয়ে তাঁদের জ্ঞান চর্চা করতেন। তপোবনের বৃক্ষ, ফলমূল, পশু-পক্ষী তাঁদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল। ভারতীয় সংস্কৃতির মূলমন্ত্র বেদ ও উপনিষদসহ প্রাচীন সাহিত্যের বেশিরভাগই এই তপোবনে রচিত হয়েছিল। রামায়ণ ও মহাভারত মহাকাব্যে অরণ্যের গুরুত্বের বিষয়টি স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। রামচন্দ্রের বনবাস এবং মহাভারতের বনপর্ব এই দৃষ্টান্তের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য প্রমাণ।

শহুরে সভ্যতার নিমর্মতা:
আজকের নগরায়ণের যুগে অতীতের বনভূমি ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে। বন ধ্বংসের ফলে বৃষ্টিপাত কমে গেছে এবং মরুভূমি বৃদ্ধি পেয়েছে। এই পরিস্থিতির প্রতি ইঙ্গিত করে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন, "দাও ফিরে সে অরণ্য / লহো হে নগর।" অর্থাৎ, তিনি চান মানুষ যেন আবার প্রকৃতির কাছে ফিরে আসুক এবং বন ধ্বংসের পরিবর্তে বন সংরক্ষণে মনোযোগ দিক।

নিত্য ব্যবহার্য:
মানুষের পরম উপকারী বন্ধু। আমরা যে খাদ্য গ্রহণ করি, যে ওষুধ খাই, যে কাগজে লিখি, যে বাড়িতে থাকি, সে সবই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বৃক্ষের উপর নির্ভরশীল। বৃক্ষ আমাদের খাদ্য, ওষুধ, কাগজ, জ্বালানি, আসবাবপত্র এবং আরো অনেক কিছু দিয়ে থাকে। বৃক্ষ ছাড়া আমাদের সভ্যতার অস্তিত্বই হুমকির মুখে পড়বে।

বনবৃদ্ধি:
সবুজ প্রকৃতি মানুষের মনকে সতেজ করে। গাছপালা মানুষের চোখকে শান্ত করে এবং মনকে প্রফুল্ল করে। কিন্তু, বন ধ্বংসের ফলে পরিবেশের উপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে। সুন্দরবনের মতো অঞ্চলে প্রচুর বৃক্ষ কাটা হচ্ছে, যার ফলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ হ্রাস পাচ্ছে। কৃষি ও অন্যান্য অর্থনৈতিক কার্যকলাপের জন্য বৃষ্টি অত্যন্ত জরুরি। বনভূমি বাড়ানোর মাধ্যমে আমরা প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করতে পারি এবং পরিবেশকে সুরক্ষিত করতে পারি। সুতরাং, বন সংরক্ষণ ও বনায়ন আমাদের সবার দায়িত্ব।

বনমহোৎসব:
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বন সংরক্ষণের গুরুত্ব বুঝতেন এবং তিনি চেয়েছিলেন মানুষকে প্রকৃতির প্রতি আরও সচেতন করতে। এই লক্ষ্যে তিনি শান্তিনিকেতনে শ্রাবণ মাসে ‘বনমহোৎসব’ শুরু করেছিলেন। এই উৎসবের উদ্দেশ্য ছিল মরুভূমিকে হারিয়ে যাওয়া থেকে বাঁচানো এবং প্রকৃতিকে সবুজ করে তোলা। রবীন্দ্রনাথ নিজেই এই উৎসবের জন্য একটি কবিতা লিখেছিলেন যেখানে তিনি মরুভূমি জয় করার এবং প্রকৃতিকে ফুলে ফলে ভরে তোলার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তাঁর এই উদ্যোগের ফলে শান্তিনিকেতনে বনমহোৎসব একটি ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। আজও এই উৎসব আয়োজিত হয় এবং সরকারও এই উদ্যোগকে সমর্থন করে। শান্তিনিকেতনের বালক আশ্রমিকরা এই উৎসবে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তারা প্রকৃতির প্রতি তাদের ভালোবাসা প্রকাশ করে।

বৃক্ষচ্ছেদন নয়, বৃক্ষরোপণ করা উচিত:
বনমহোৎসবে গাছ লাগানোই যথেষ্ট নয়। শিশুকে যেমন বড় করে তোলার জন্য যত্নের প্রয়োজন, তেমনি একটি চারা গাছকেও বড় গাছে পরিণত করার জন্য নিবিড় যত্নের প্রয়োজন। প্রতি বছর বনমহোৎসব উপলক্ষে স্কুল, কলেজ এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক হারে গাছ লাগানো হয়। কিন্তু পরবর্তী সময়ে এই গাছগুলিকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য পর্যাপ্ত উদ্যোগ নেওয়া হয় না। ফলে অনেক গাছই মরে যায়। আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত শুধু গাছ লাগানো নয়, বরং সেগুলিকে বাঁচিয়ে রাখা। বৃক্ষরোপণের পাশাপাশি বৃক্ষ সংরক্ষণের দিকেও আমাদের মনোযোগ দিতে হবে।
 
উপসংহার:
শহুরে জীবনের বর্ধিত দূষণের ফলে মানুষের মধ্যে প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রতি আকর্ষণ দিন দিন বাড়ছে। শহরের কোলাহল থেকে দূরে গিয়ে শান্তি খুঁজতে মানুষের মধ্যে একটি প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। যদিও আধুনিক জীবনযাত্রা থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে জীবনযাপন করা বর্তমান সমাজে সম্ভব নয়, তবুও আমরা আমাদের আশেপাশে সামান্য পরিবর্তন আনার মাধ্যমে প্রকৃতির সান্নিধ্য পেতে পারি। শহরের খালি জায়গাগুলিতে বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে আমরা প্রাণী জগতের অস্তিত্ব রক্ষা করতে পারি।

কথোপকথনে যোগ দিন